ডুয়েট ভর্তি যোগ্যতা
ডুয়েটে ভর্তি হতে হলে অবশ্যই নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদন্ড পূরণ করতে হবে। এগুলো পূরণ করতে না পারলে একজন শিক্ষার্থী কোনভাবেই ডুয়েটে ভর্তি হতে পারবেন না। নিম্নে ডুয়েটে ভর্তির যোগ্যতার জন্য শর্তাবলী উল্লেখ করা হলো:-
১.ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করতে হবে
ডুয়েটে যারা ভর্তি হতে চান সেই সকল আবেদনকারীদের কে অবশ্যই সরকার অনুমোদিত কোনো পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পূর্ণ করতে হবে।
২.ন্যূনতম ফলাফলের মানদন্ড পূরণ করতে হবে
ফলাফলের মানদণ্ড পূরণ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ডিপ্লোমা কোর্সে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ নাম্বার এবং CGPA ৩ থেকে ৪ হতে হবে।
৩.সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হবে
আপনি যে বিষয় নিয়ে ডিপ্লোমা করছেন সেই বিষয়ে মিল থাকা বিষয় নিয়েই আপনাকে ডুয়েটে ভর্তি হতে হবে। আপনার যদি মেকানিক্যাল ডিপ্লোমা থাকে তাহলে আপনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হতে পারবেন। অন্য কোন ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হতে পারবেন না।
৪.বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে
ডুয়েটে ভর্তি হতে হলে আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে। বাংলাদেশী নাগরিক ছাড়া কেউ এখানে ভর্তি হতে পারবে না।
তারপরে ডুয়েটে ভর্তি হওয়ার জন্য একটি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষায় mcq বা বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ধরা হয়ে থাকে। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও সংশ্লিষ্ট টেকনিক্যাল সাবজেক্টে এই পরীক্ষা ২০০ মার্কের হয়ে থাকে। পরীক্ষার জন্য আবেদনকারীদের কে দুই ঘন্টা সময় দেওয়া হয়ে থাকে।
ডুয়েটে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করবেন কিভাবে
ডুয়েটে ভর্তির জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। প্রতিবছর জুন ও জুলাই এর মধ্যে ডুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
➡️ প্রথমে আপনাদেরকে ডুয়েটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
➡️ তারপরে Admission সেকশনে গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
➡️ নির্ধারিত আবেদন ফি রকেট বিকাশ নগদ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন।
➡️ আবেদন শেষে প্রবেশপত্র বা এডমিট কার্ড ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন।
ডুয়েট পরীক্ষার মোট আসন সংখ্যা কত। ডুয়েট সিট কয়টি
ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট)–এ ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে মোট আসন সংখ্যা ৮১০টি। নিম্নে এই সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:-
বিভাগভিত্তিক আসন সংখ্যা:
| আসন সংখ্যা |
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (CE) | ১২০টি |
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) | ১২০টি |
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) | ১২০টি |
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ME) | ১২০টি |
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (TE) | ১২০টি |
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (IPE) | ৩০টি |
কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ChE) | ৩০টি |
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং (FE) | ৩০টি |
ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (MME) | ৩০টি |
বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (BME) | ৩০টি |
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ECE) | ৩০টি |
আর্কিটেকচার (ARCH) | ৩০টি |
মোট | ৮১০টি |
তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে ডুয়েট আসন সংখ্যা মোট ৮১০ টি।
ডুয়েট পড়ার খরচ কত। ডুয়েট ভর্তি কোচিং খরচ
ডুয়েটে পড়াশোনা করতে কত টাকা খরচ হবে এটা সাধারণত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন:-
➡️ ভর্তি খরচ
➡️ সেমিস্টার ভিত্তিক খরচ
➡️ আবাসন ও ব্যক্তিগত খরচ
এই তিন ধরনের খরচ নিয়ে আমরা পয়েন্ট আকারে আলোচনা করবো।
ভর্তি ফি খরচ কত
ভর্তি ফি এই টাকাটা সাধারণত একবারই নেওয়া হয়ে থাকে। ডুয়েটে ভর্তি ফি খরচ ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে হবে। তাছাড়া আরো কিছু খরচ রয়েছে। পরিচিতি কার্ড ও মেডিকেল ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, একাডেমির ড্রেস ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ খরচ ১২ থেকে ১৭ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে যাবে।
সেমিস্টার ভিত্তিক খরচ কত
ডুয়েটের চার বছরের করছে মোট আটটি সেমিস্টার রয়েছে। আটটি সেমিস্টারের খরচ যথাক্রমে – টিউশন ফি ৪ হাজার টাকা, পরীক্ষার ফি ১ হাজার টাকা, ল্যাব-ফি ২ হাজার টাকা, লাইব্রেরী ও আইটি সেক্টরে খরচ ১ হাজার টাকা। তাহলে প্রতি সেমিস্টারে খরচ আসছে ৮ হাজার টাকা। ৮ টি সেমিস্টারে খরচ হবে ৬৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা।
আবাসন ব্যক্তিগত খরচ কত
সরকারি আবাসনের ব্যবস্থা এখানে থাকলেও অনেকে আরও ভালো সুযোগ সুবিধার জন্য বাসা ভাড়া করে থাকেন অনেকে। ঘর ভাড়া দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা, খাবার-দাবার ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা, যাতায়াত খরচ ১ হাজার টাকা। মোট মাসের খরচ হবে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে।
তবে অনেকেই ডুয়েটে পড়াশোনা করে থাকেন কেননা এটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এখানে থাকার সুবিধা রয়েছে। এখানে পড়াশোনা করে উচ্চ মানের ডিগ্রী পাওয়া যায় এবং পরবর্তীতে সরকারি চাকরি করা যায়। কুয়েটে চার বছরের কোর্স সম্পূর্ণ করতে ৩ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকার মত খরচ হতে পারে।
ডুয়েট কি সরকারি নাকি বেসরকারি
ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ডুয়েট একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। যারা ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে থাকেন তাদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দেয় ডুয়েট। ডুয়েট বাংলাদেশের অন্যতম প্রকৌশল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।
ডুয়েট কোথায় অবস্থিত
অনেকেই আছেন যারা ডুয়েট কোথায় অবস্থিত জানেন না। ডুয়েট ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি গাজীপুরে অবস্থিত।
ডুয়েটে বিএসসি কত বছর
ডুয়েটে শুধুমাত্র সেই সকল শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবেন যারা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেছেন। ডিপ্লোমা শেষ করে ডুয়েটে ভর্তি হয়ে চার বছরের বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পূর্ণ করতে হবে।