বিবিএ পড়ার যোগ্যতা ও খরচ কত সম্পূর্ণ গাইডলাইন

বিবিএ এর পূর্ণরূপ হলো Bachelor of Business Administration। সহজ ভাবে বলতে গেলে এটি হলো স্নাতক ডিগ্রী যা ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনের দিক থেকে পড়ানো হয়। বিবিএ শেষ করার পর অনেকেই ব্যাংক,কর্পোরেট সেক্টর, মার্কেটিং ও সেলস ফিল্ডে কাজ করে থাকেন। আজকের পোস্টে বিবিএ পড়ে কি হওয়া যায়, বিবিএ পড়ার যোগ্যতা,বিবিএ পখরচ ও যারা বিবিএ করে তাদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে এই নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-

 

বিবিএ পড়ার যোগ্যতা

 

যে কেউ ইচ্ছে করলে বিবিএ করতে পারবে না। বিবিএ করার জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা লাগে। বিবিএ পড়ার যোগ্যতা বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভিন্ন হতে পারে। নিম্নে বাংলাদেশের বিবিএ পড়ার সাধারণ যোগ্যতা উল্লেখ করা হলো:-

➡️ বিজ্ঞান বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগ থেকে অবশ্যই এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। তাছাড়া ন্যূনতম জিপিএ এসএসসিতে ৩ পয়েন্ট ও এসএসসিতেও ৩.০০ হওয়া লাগবে। জিপিএর হিসাব সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে কমবেশি হতে পারে।

➡️ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যদি ভর্তি হতে চান তাহলে অবশ্যই ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, CU,RU এগুলোতে ভর্তি হতে হলে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে চাইলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া লাগবে না।

➡️ বিবিএ তে ভর্তি হওয়ার আগে ইংরেজিতে দক্ষতা সম্পন্ন হতে হবে। কেননা বিবিএ কোর্সগুলো ইংরেজিতে হয়ে থাকে তাই ইংরেজিতে দক্ষতা না থাকলে কোর্স শেষ করতে অসুবিধা হবে। ভর্তি হওয়ার আগে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজিতে দক্ষতা যাচাই করার জন্য লেখা ও ভাইবা নিয়ে থাকে।

 

বিবিএ তে ভর্তি হওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে

বিবিএ তে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগে এটা জানা খুবই জরুরী। নিম্নে বিবিএ তে ভর্তি হওয়ার জন্য যে সকল ডকুমেন্ট লাগে তা উল্লেখ করা হলো:-

১.এসএসসি /দাখিল / O লেভেল সনদ ও মার্কশীট লাগে।

২. এইচএসসি /আলিম / A লেভেল সনদ ও মার্কশিট লাগে।

৩. জন্ম নিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি লাগবে।

৪. পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি রঙিন ছবি লাগবে।

৫. ভর্তি পরীক্ষা শেষে যে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়ে থাকে সেটি লাগবে।

৬. ভর্তি ফি জমার রশিদ লাগবে।

৭. চারিত্রিক সনদপত্র ও মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট লাগবে।

 

BBA এর সাবজেক্ট কি কি

বিবিএ এর সাবজেক্ট কি এটা জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা প্রথমেই আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে আপনি বিবিএ কোন সাবজেক্ট নিয়ে করতে চান। যার জন্য বিবিএ এর সাবজেক্ট লিস্ট জানাটা খুবই জরুরী।

১.Principles of Management

২.Principles of Marketing

৩.Financial Accounting

৪.Managerial Accounting

৫.Business Communication

৬.Microeconomics

৭.Macroeconomics

৮.Business Mathematics

৯.Business Statistics

১০.Business Law

১১.Organizational Behavior

১২.Information & Communication Technology (ICT)

১৩.Operations Management

১৪.Human Resource Management (HRM)

১৫.Financial Management

১৬.Strategic Management

১৭.Entrepreneurship Development

 

বিবিএ তে কি পড়ানো হয়

বিবিএ নিয়ে যারা পড়াশোনা করে থাকে তাদের অনেকের প্রশ্ন বিবিএ তে কি পড়ানো হয়। বিবিএ তে কি কি পড়ানো হয় নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো:-

১.প্রাথমিক ব্যবসা বিষয়ক কোর্সসমূহ

Principles of Management (পরিচালনার মূলনীতি)

Principles of Marketing (বিপণনের মূলনীতি)

Business Communication (ব্যবসায়িক যোগাযোগ)

Business Mathematics (ব্যবসায়িক গণিত)

Introduction to Business (ব্যবসার পরিচিতি)

 

২. হিসাববিজ্ঞান ও অর্থনীতি

Financial Accounting (আর্থিক হিসাব)

Managerial Accounting (ব্যবস্থাপনাগত হিসাব)

Microeconomics (ক্ষুদ্র অর্থনীতি)

Macroeconomics (মহা অর্থনীতি)

 

৩. পরিসংখ্যান ও আইটি

Business Statistics (ব্যবসায়িক পরিসংখ্যান)

Management Information Systems (MIS)

Computer Applications in Business

 

৪. ব্যবস্থাপনা ও মানবসম্পদ

 

Human Resource Management (এইচআরএম)

Organizational Behavior (প্রতিষ্ঠানগত আচরণ)

Operations Management

 

৫. ফাইন্যান্স ও ব্যাংকিং

Financial Management

Investment & Portfolio Management

Banking & Insurance

 

৬.আইন ও নৈতিকতা

Business Law (ব্যবসা আইন)

Business Ethics (নৈতিকতা

 

৭. মার্কেটিং ও কৌশল

Consumer Behavior

Marketing Research

Strategic Management

 

৮.ইন্টার্নশিপ ও থিসিস/প্রজেক্ট:

স্নাতক শেষ বর্ষে সাধারণত ইন্টার্নশিপ বা কোনো গবেষণাভিত্তিক প্রজেক্ট করতে হয়।

 

বিবিএ পড়ার খরচ

 

বিবিএ পড়ার খরচ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে কোন বেশি হয়ে থাকে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি বিবিএ নিয়ে পড়াশোনা করেন তাহলে মাসিক সেমিস্টার ফি সাধারণত ৪ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি বিবিএ করেন তাহলে চার বছরে খরচ হতে পারে ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি বিবিএ করেন তাহলে খরচটা এমন হবে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করলে ক্রেডিট খরচ লাগবে ছয় হাজার টাকা। চার বছরের মোট ১২৫ থেকে ১৩০টি ক্রেডিট লাগে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি বিবিএ সম্পন্ন করতে চান তাহলে চার বছরে খরচ হবে পাঁচ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকার কাছাকাছি।

যদি কম খরচে বিবিএ সম্পূর্ণ করতে চান তাহলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কিছু কলেজ রয়েছে সেগুলোতে করতে হবে। সরকারি বাণিজ্য কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজে পড়েন তাহলে খরচ আসবে ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার কাছাকাছি।

বাংলাদেশে বিবিএ কত বছর

বাংলাদেশের বিবিএ চার বছরের হয়ে থাকে। তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছরের বিবিএ প্রোগ্রামও দেখা যায়। চার বছরের বিবিএ প্রোগ্রামটি বেশি পরিচিত এবং এখানে ইন্টারশীপ ও থিসিসের সুযোগ রয়েছে।

Sharing Is Caring:

Leave a Comment