ইসলামের রোজার দ্বিতীয় প্রকার হচ্ছে নফল রোজা। যা পালন করা একজন মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক নয়, কিন্তু একজন বান্দা যদি নফল রোজা পালন করে, তাহলে তার বিনিময়ে অনেক ফজিলত ও সওয়াব পাবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন যদি তোমাদের ফরজ রোজায় কোনো ঘাটতি থাকে তাহলে নফল রোজা সেগুলো পূরণ করবে। রাসূল সাঃ নিজে নিয়মিত নফল রোজা রাখতেন এবং তার উম্মতকে নফল রোজা পালন করতে উৎসাহিত করতেন।
নফল রোজা কি?
নফল রোজা কোন বান্দার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। নফল রোজা হচ্ছে একটি স্বেচ্ছামূলক রোজা। যেটি রাখলে অধিক সওয়াভ পাওয়া যায়, কিন্তু না রাখলে গুনাহ নেই। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। নফল রোজা মূলত ফরজ রোজার পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। কেউ যদি নফল রোজা রাখেন তাহলে নেকি পাবেন, কিন্তু না রাখলে কোন গুনাহ নেই।
নফল রোজার প্রকারভেদ
নফল রোজা ওয়াজিব না হলেও এটি অনেক ফজিলতপূর্ণ। ইসলামে বিভিন্ন নফল রোজার সুপারিশ করা হয়েছে। নিম্নে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নফল রোজা দেওয়া হলো
জিলহজ মাসের রোজা:
জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিন রোজা রাখা খুবই ফজিলত পূর্ণ একটি ইবাদত। বিশেষ করে নয় জিলহজ অর্থাৎ আরাফাতের দিন রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ একটি ইবাদত।
শাওয়াল মাসের ৬ রোজা:
শাওয়াল মাসে ৬ রোজা একসঙ্গে রাখা যায় আবার ভিন্ন ভিন্নভাবেও রাখা যায়। রাসূল (সা.) বলেছেন,”যে ব্যক্তি রমজানে রোজা রাখল, অতঃপর এর পেছনে শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোজা রাখল” সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।
আশুরার রোজা:
মহররম মাসের ১০ তারিখকে বলা হয় আশুরা। এদিন এবং তার আগে বা পরে মোট দুই দিন রোজা রাখা অনেক ফজিলতপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হল মহররম মাসের রোজা।
শাবান মাসে রোজা:
শাবান মাসের রমজানের প্রস্তুতিমূলক মাস বলা হয়। রাসূল (সা.) শাবান মাসে অধিক পরিমাণে রোজা রাখতেন এবং বলতেন শাবান মাস হচ্ছে রমজানের প্রস্তুতিমূলক মাস। (আবু দাউদ)
বিবাহে অসমর্থ ব্যক্তিদের জন্য রোজা:
যারা বিয়ে করতে চায় না বা বিয়ে করতে অক্ষম তাদের জন্য বেশি করে নফল রোজা রাখার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে ।
সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজা:
সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল উপস্থাপন করা হয়। এর জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন আমি চাই যে আমার আমলে এ অবস্থায় উপস্থাপনা করা হোক যে আমি একজন রোজাদার। (তিরমিজি)
শেষ কথা
নফল রোজা কোন বান্দার জন্য বাধ্যতামূলক না হলেও এটি একটি ফজিলত পূর্ণ ইবাদত। নফল রোজা রাখার মাধ্যমে অতিরিক্ত সওয়াব ও আল্লাহর সন্তুষ্টির অর্জন করা যায়। তাই আমরা যদি নিয়মিত নফল রোজা পালন করি, তাহলে ইহকাল ও পরকাল উভয়ই সুন্দর হবে।
আশা করছি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার পছন্দ হয়েছে। ধন্যবাদ।