সিএ নিয়ে কেন পড়াশোনা করবেন
সিএ নিয়ে কেন পড়াশোনা করবেন এটা সম্পর্কে আমাদের সর্বপ্রথম ধারণা নিতে হবে। সিএ নিয়ে যারা পড়াশোনা করেন তারা উচ্চ বেতন ও ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কেননা সিএ পাস করার পর সরকারি বেসরকারি সংস্থা ব্যাংক, বীমা, ও বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে আপনারা সরাসরি কাজ করার সুযোগ পাবেন।
যারা সিএ হোল্ডার রয়েছেন তাদের বেতন অন্যান্য পেশাজীবী কর্মীদের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে। যারা গণিত ফাইন্যান্স ও হিসাব বিজ্ঞানে আগ্রহী তাদের জন্য সিএ উপযুক্ত। সিএ কোর্স করার সময় একাউন্টিং ও ফাইন্যান্স সম্পর্কে অনেক ধারণা দেওয়া হয় যার কারণে পরবর্তীতে নিজের অডিট ফার্ম দেওয়া যায়। সিএ পড়া কঠিন হলেও অনেকেই সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য এটা করে থাকেন।
সিএ পড়ার যোগ্যতা। CA করতে কত পয়েন্ট লাগে
সিএ হলো হিসাব বিদ্যায় পেশাগত দক্ষতার সর্বোচ্চ ডিগ্রি। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে এই ডিগ্রী কে CA বলা হয়ে থাকে। সিএ পড়ার জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হয়। সাইন্স, আর্টস বা কমার্স যেকোনো ডিপার্টমেন্ট থেকে পড়াশোনা করুন না কেন আপনাদেরকে অবশ্যই নিচের শর্তাবলী গুলো মানতে হবে। যেমন:-
১. এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় দুইটা মিলিয়ে জিপিএ ৯ পয়েন্ট হতে হবে। তাছাড়া সিএ নিয়ে যারা পড়াশোনা করতে চান তাদের এসএসসি অথবা এইচএসসি যেকোনো একটিতে জিপিএ ৫ থাকা লাগবে।
২. ইংরেজি মাধ্যম থেকে o- level, A -level,শেষ করা শিক্ষার্থীদের জন্য A -level এ ন্যূনতম ৩৬ পয়েন্ট ও O -level এ নূন্যতম ১২ পয়েন্ট থাকা লাগবে। এক্ষেত্রে কোন শিক্ষার্থী যদি ইংরেজি মাধ্যম থেকে O – level এবং বাংলা মাধ্যম থেকে Hsc শেষ করে তার জন্য O level এ ৩৬ পয়েন্ট এবং এইচএসসিতে ন্যূনতম জিপিএ ৪ থাকতে হবে।
এইচএসসির পর যারা সিএ পড়তে চাইবে তাদের জন্য চার বছর আইসিএবি অনুমোদিত ফার্মে অবশ্যই আর্টিকেলশীপ করা লাগবে। তারপরে আইএসবি তে নিয়মিত ক্লাস করে নির্দিষ্ট সময় পর পর পরীক্ষায় পাস করে সার্টিফিকেট লেভেল সম্পন্ন করতে হবে।
গ্রাজুয়েশনের পরে সিএ পড়ার যোগ্যতা
যারা এইচএসসির পড়ে সিএ না করে গ্রাজুয়েশনের পরে সিএ পড়তে চান তাদের জন্য কি কি করা লাগবে নিম্নে এই বিষয়ে ধারণা প্রদান করা হলো:-
যদি কোন ব্যক্তি UGC অনুমোদিত কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স বা মাস্টার্স শেষ করে থাকেন তাহলে সে সিএ পড়তে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে অনার্স কিংবা মাস্টার্সে সিজিপিএ ৪ এর মধ্যে ন্যূনতম সিজিপিএ ২.৫ থাকতে হবে। তা না হলে কোন পরীক্ষায় সেকেন্ড ক্লাসের নিচে পাওয়া যাবে না।
আবার অনেকেই আছেন যারা স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শেষ করে সিএ করতে চান। তাদের জন্য মেয়াদ হবে তিন বছর। এজন্য তাদের ফার্মে কাজ করার পাশাপাশি আইসিএবি এর নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে সার্টিফিকেট লেভেল সম্পূর্ণ করতে হবে।
সিএ পড়তে কত বছর লাগে
সিএ পড়তে সাধারণত তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লেগে থাকে। এখন প্রতিবছরই অসংখ্য শিক্ষার্থী সিএ পাস করে আইসিএবীর সনদধারী চার্টাট একাউন্টেন্ট হচ্ছেন। বাংলাদেশের সি এ কোর্স সম্পূর্ণ করতে এখন চার থেকে ছয় বছর সময় লাগছে।
সিএ পড়তে কত টাকা লাগে। বাংলাদেশে সিএ পড়ার খরচ । CA করতে কত খরচ হয়
বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিএ পড়ানো হয় না। কেননা সিএ হলো একটা সার্বজনীন স্বীকৃত প্রফেশনাল ডিগ্রি। আমাদের দেশের নির্দিষ্ট ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু প্রতিষ্ঠান থেকেই সিএ পড়তে হয়। সিএ পড়ার খরচ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে কম বেশি হয়ে থাকে। অর্থাৎ এইচএসসির পর সিএ পড়তে গেলে যে পরিমাণ খরচ হয় গ্রাজুয়েশনের পর সিএ পড়তে গেলে খরচ ভিন্ন হবে।
সিএ পড়ার সুবিধা
সিএ নিয়ে পড়াশোনা করলে অবশ্যই কিছু সুবিধা রয়েছে। সিএ ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আর্থিক খাতে একটি প্রতিষ্ঠিত পেশা গড়ে তুলতে পারে। তাছাড়া সিএ করা ব্যক্তিরা তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ভালো বেতন ও সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন। তাছাড়া যারা সিএ শেষ করে ফেলেছেন তারা বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে চাকরি করার সুযোগ পাবেন। চাকরি যদি না করেন তাহলে এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সিএরা তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারেন।
সিএ পড়ার অসুবিধা
সিএ নিয়ে পড়াশোনা করার অনেক অসুবিধা রয়েছে।সিএ কঠিন একটি সাবজেক্ট অর্থাৎ এর বিষয়বস্তু খুবই জটিল। তাছাড়া বইপত্র সব ইংরেজিতে হওয়ার কারণে অনেকের বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে। সিএ পরীক্ষার মান অনেক কঠিন যার কারনে পাশের হার অনেক কম। সময়ের অভাবে অনেকের সিএ পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। কেননা কলেজে পড়াশোনা সহ আরো অনেক কিছু ম্যানেজ করে তারপরে সিএ পড়ার জন্য সময় দিতে হয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো সিএ পড়ার খরচ অনেক বেশি। কোর্স ফি ও বই পত্রর আরো অনেক খরচ হয়েছে যার কারণে অনেকেই সিএ নিয়ে পড়াশোনা করতে চান না।